ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক “বাংলাদেশ প্রতিদিন”-এর সিলেট অফিসের স্টাফ রিপোর্টার ও কলামিস্ট শেখ জাহিদ হাসান আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেছেন। ১ জুলাই ২০২৫ তারিখে তিনি ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, যা ব্যুরো প্রধান কর্তৃক গ্রহণ করা হয়েছে।
শেখ জাহিদ হাসান দীর্ঘদিন ধরে সিলেট অঞ্চলে সাংবাদিকতায় সক্রিয় থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও ইস্যু নিয়ে অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন ও বিশ্লেষণাত্মক কলাম রচনা করে পাঠক মহলে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তাঁর সাংবাদিকতা ছিল সমাজের ন্যায়ের দাবিতে এক নিবেদিত প্রচেষ্টা, যেখানে তথ্যের যথাযথতা ও বিশ্লেষণের ভারসাম্য বজায় রাখা হতো সর্বদা।
পদত্যাগপত্রে তিনি ব্যক্তিগত কিছু গুরুতর কারণে আগামী কয়েক মাস সিলেটের বাইরে অবস্থান করতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন, যার ফলে নিয়মিত অফিসে উপস্থিত থাকা ও দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হবে না। এ পরিস্থিতিতে পেশাগত দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোই শ্রেয় মনে করে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শেখ জাহিদ হাসানের পেশাগত জীবন শুরু হয় কলেজজীবন থেকেই। সিলেটের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করে তিনি ক্রমশ জেনেরেশনের একজন স্বতন্ত্র সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার প্রতিবেদনগুলো সর্বদা পাঠকদের সামনে রাখে সঠিক তথ্য, দায়বদ্ধতা এবং নৈতিকতার স্বাক্ষর। সমাজের অবহেলিত ও সংবেদনশীল বিষয়ের প্রতি তার অঙ্গীকার তাকে করে তুলেছে আদর্শ সাংবাদিকের একজন প্রতীক।
তাঁর কলামে উঠে এসেছে বাংলাদেশ ও সিলেট অঞ্চলের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার, দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং সুশীল সমাজের ভূমিকা নিয়ে গভীর আলোচনা। এসব লেখার জন্য তিনি পেয়েছেন পাঠক ও সহকর্মীদের প্রশংসা।
পদত্যাগের পেছনের কারণ ও প্রতিক্রিয়া
নিজের পদত্যাগের পেছনে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে তিনি প্রধানত কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সাংবাদিক মহলে এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সহকর্মী, বন্ধু ও সামাজিক গণমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন অনেকে। অনেকেই তার অবদান স্মরণ করে তাকে নতুন উচ্চতায় কাজ করার শুভকামনা জানিয়েছেন।
সিলেট প্রেস ক্লাবের সদস্য সাংবাদিক মোঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন,
“জাহিদ ভাই আমাদের জন্য একজন আদর্শ। তার সাংবাদিকতা থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি। তার পদত্যাগে আমরা অবশ্যই দুঃখিত, তবে তার ব্যক্তিগত পরিস্থিতি সম্মান করি এবং আশা করি তিনি দ্রুত ফিরে আসবেন।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও প্রত্যাশা
শেখ জাহিদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন,
“আমি কখনোই সাংবাদিকতার প্রতি দূরে থাকবো না। ব্যক্তিগত কারণেই সাময়িক বিরতি নিচ্ছি। ভবিষ্যতে আরও বিশ্লেষণধর্মী ও গবেষণামূলক কাজে মনোযোগ দেবো। আশা করি, পাঠকরা আমাকে আগের মতোই সমর্থন করবেন।”
এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তার সহকর্মী ও পাঠকরা যে, তিনি সময়ের সুযোগ নিয়ে নতুন আঙ্গিকে লেখালেখি চালিয়ে যাবেন এবং সাংবাদিকতার ধারাকে আরও সমৃদ্ধ করবেন।
সিলেটের সাংবাদিক সমাজে এক অপূরণীয় শূন্যতা।
শেখ জাহিদ হাসান—যিনি শুধু একজন সাংবাদিক নন, ছিলেন এক আদর্শ, এক মানদণ্ড।
তাঁর প্রতিপক্ষরাও অকপটে বলেন—তিনি ছিলেন একজন সজ্জন মানুষ।
নিবেদিতপ্রাণ, বিশ্বস্ত ও ক্লিন ইমেজের এই মানুষটির হঠাৎ পদত্যাগ সিলেটের গণমাধ্যম অঙ্গনে তৈরি করেছে ব্যতিক্রমধর্মী এক অভাব। তাঁর অনুসন্ধানী দৃষ্টিভঙ্গি ও নির্ভীক লেখনী বহুবার রাজনৈতিক-সামাজিক জটিলতার মধ্যে আলো জ্বালিয়েছে।
যেখানে অনেকে চুপ থেকেছেন, তিনি কলম ধরেছেন—সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে।
অসংখ্য তরুণ সাংবাদিকের জন্য তিনি ছিলেন এক প্রেরণা, একজন পথপ্রদর্শক।
এমন একজন ব্যক্তিত্বের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা “বাংলাদেশ প্রতিদিন”-এর জন্যও এক বড় অর্জন। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেন,
“শেখ জাহিদ আমাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য অনন্য সম্পদ ছিলেন। আমরা তার অবদানের স্বীকৃতি জানাই এবং তার সুস্থতা ও উন্নতির জন্য দোয়া করি।”
সংক্ষিপ্ত পটভূমি
শেখ জাহিদ হাসান সিলেটের সাংবাদিক মহলে একজন পরিচিত নাম। তিনি পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি ও মানবাধিকার বিষয়ক কাজেও যুক্ত থেকে সাংবাদিকতার বাইরে সামাজিক অবদান রেখেছেন। তাঁর কলামগুলো জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত হয়ে আসছে।